খুলনায় নদী দখল করে ইটভাটার রমরমা ব্যবসা চলছে। দখলকারীরা ক্ষমতাসীন হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তেমন ভূমিকা নিতে পারছেন না। তবে নদী দখলের পরিমাণ ও কারা দখলে আছে সেই তালিকা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী খুলনার চারটি নদীতে ২৮টি ইট ভাটা দখল করে আছে।
তথ্য অনুযায়ী, ভদ্র নদীর বাম ও ডান তীরে, হরি নদী, আপার শৈলমারী নদী এবং আতাই নদীর বাম তীর সংলগ্ন ৫ হাজার ৪৩৩ মিটার দখল করে আছে ২৮টি ইটভাটা।
আরও পড়ুন: লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা: পাইকগাছায় স্থানীয়দের নাভিশ্বাস
ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া, গুটুদিয়া, রুদাঘড়া ইউনিয়ন, তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন, রূপসা উপজেলার আইচগাতি ইউনিয়ন এবং দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নে এসব নদী দখল করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কেপিবি ব্রিকস, জেবি-১ ব্রিকস, স্টোন ব্রিকস, এসকেএসব্রিকস, বিবিসি ব্রিকস, এমআরডি ব্রিকস, কেবি ব্রিকস, কেআরবি ব্রিকস, স্টার ব্রিকস, এফএমভি ব্রিকস, এএলএমবি ব্রিকস, মেরী ব্রিকস, লুইন ব্রিকস, এমএসব্রিকস, এনএনব্রিকস, জেসি ব্রিকস, রাবেয়া ব্রিকস, কেবিএম ব্রিকস, কেবিসি ব্রিকস, এবিসি ব্রিকস, রাজ ব্রিকস, সান ব্রিকস।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপনের প্রতিবাদ
খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা ইটভাটা মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, ইটভাটার কারণে নদী বন্ধ হচ্ছে না। ভবদহ নদীতে জোয়ার-ভাটা কমে অত্র এলাকার নদী বন্ধ হচ্ছে।
তিনি জানান, অনেক ব্যবসায়ী বন্দোবস্ত করা জমির ওপর ব্যবসা করে। তবে অনেকেই হয়ত নদী দখল করে ব্যবসা করছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ৬টি অবৈধ ইটভাটা ভেঙে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, খাস জমি দখল করে কেউ ব্যবসা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। পাশাপাশি বন্দোবস্ত করা জমিতে ব্যবসার কারণেও যদি নদীর ক্ষতি হয়, সেক্ষেত্রে প্রশাসনের উচিত ব্যবস্থা নেয়া।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ইটভাটার ব্যবসার জন্য নদীর মধ্যে যারা দখল করেছে তাদের তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকা চলমান। বিষয়টি জেলা প্রশাসককেও জানানো হয়েছে। যেহেতু নদী খাস জমি তাই আমরা ইট ভাটা মালিকদের নোটিশ করতে পারি না। তবে জেলা প্রশাসক এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটে অবৈধ ইটভাটাকে লাখ টাকা জরিমানা
পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সাইফুর রহমান খান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কাছে লিখিত আকারে নদী দখল করে যারা ইটভাটা করেছে তাদের তালিকা চেয়েছি। এখনও এটা হাতে পাইনি। আমরা মোবাইল কোর্টসহ প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ইট ভাটার মালিকদের শর্ত ভঙ্গের কারণে লাইসেন্স বাতিল করে দিতে পারি।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে অবৈধ ইটভাটা সাতদিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘ইটভাটার বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলছে। একাধিক ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানাও করা হয়েছে। যারা নদী দখল করে ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’